Wednesday, February 19, 2025

 বয়স বাড়ার সাথে সাথে দুটো জিনিস নিয়মিত চেক করুন

বয়স বাড়ার সাথে সাথে দুটো জিনিস নিয়মিত চেক করুন



 

 

বয়স বাড়ার সাথে সাথে দুটো জিনিস নিয়মিত চেক করুন।

১) ব্লাড প্রেসার।

২) ব্লাড সুগার।

 

চারটি জিনিস একেবারেই ভুলে যান৷

১) বয়স বাড়ছে এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করা,

২) অতীত নিয়ে সর্বদা অনুশোচনা করা,

৩) সবসময় দুঃখে কাতর হয়ে থাকা,

৪) মানসিক উৎকণ্ঠা বা উদ্বেগ।

 

পাঁচটি জিনিস খাবার থেকে যত পারুন এড়িয়ে চলুন।

১) লবন,

২) চিনি,

৩) অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার ।

৪) অতিরিক্ত ভাজা ভূজি খাবার

৫) বাইরের কেনা খাবার বা প্রসেসেড ফুড।

 

পাঁচটি জিনিস খাবারে যত পারুন বাড়িয়ে নিন।

১) সব রকমের সবুজ শাক

২) সব রকম সবুজ সব্জি, সীম বা মটরশুটি ইত্যাদি

৩) ফলমূল,

৪) বাদাম,

৫) প্রোটিন জাতীয় খাবার।

 

মানসিক শান্তি বা সুখী হতে সাতটি জিনিস সবসময় সাথে রাখার চেষ্টা করুন।

১) একজন প্রকৃত ভালো বন্ধু,

২) নিজের সমগ্ৰ পরিবার,

৩) সবসময় সুচিন্তা,

৪) একটি নিরাপদ ঘর কিংবা আশ্রয়,

৫) অল্পেতে খুশি হওয়ার চেষ্টা,

৬) অতিরিক্ত অর্থ চিন্তা থেকে নিজেকে দূরে রাখা,

৭) কিছু সময় আধ্যাত্মিক চর্চায় বা সৎসঙ্গ দেওয়া।

 

ছয়টি জিনিষের চর্চা রাখুন।

১) অহংকার না করা,

২) সবার সাথে হাসিমুখে কথা বলা,

৩) মানুষের সাথে ভালো আচরণ করা,

৪) নিয়মিত শরীর চর্চা করা ।কিছুক্ষণ হাঁটা নিয়মিত ।

৫) ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা।

৬) সরল ও সৎ জীবন যাপন

 

সাতটি জিনিস এড়িয়ে চলুন।

১) কর্য,

২) লোভ,

৩) আলস্য,

৪) ঘৃণা,

৫) সময়ের অপচয়,

৬) পরচর্চা,পরনিন্দা

৭) কোনো রূপ নেশা বা আসক্তি

 

পাঁচটি জিনিষ কখনোই করবেন না।

১) অতিরিক্ত ক্ষুধা নিয়ে খেতে যাওয়া,

২) অতিরিক্ত পিপাসায় কাতর হয়ে জল পান করা,

৩) অতিরিক্ত দূর্বল হয়ে ঘুমোতে যাওয়া,

৪) অতিরিক্ত দূর্বল হয়ে বিশ্রাম নেওয়া,

৫) একেবারে অসুস্থ হয়ে ডাক্তারের কাছে যাওয়া,

সব সময় নিজেকে সুস্থ রাখতে সচেতন হোন

সুস্থ্য থাকুন - ভাল থাকুন - ভাল রাখুন”

 


আপনার নিজের জন্য কি ছয়টা মাস সময় হবে?

আপনার নিজের জন্য কি ছয়টা মাস সময় হবে?

 



আপনার নিজের জন্য কি ছয়টা মাস সময় হবে?


একবার ভেবে দেখুন। শুধু ছয় মাস। খুব বেশি না।

এই ছয় মাসে নিজের জীবনের অপ্রয়োজনীয় বিষয়গুলো সরিয়ে রেখে শুধুমাত্র নিজের জন্য সময় দিবেন।

কী করবেন এই সময়ে? নিজের স্বপ্ন পূরণ করবেন, নিজেকে নতুন করে গড়ে তুলবেন।

আমরা প্রায়ই বলি, “সময় পাই না।” কিন্তু সত্যি কি পাই না, নাকি সময়টা এমন কাজে নষ্ট করি, যেগুলো থেকে আমাদের জীবনে কিছুই যোগ হয় না?

ফালতু আড্ডা, অর্থহীন দুশ্চিন্তা, কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে স্ক্রল করা—এসব বাদ দিলে দেখবেন, আপনার হাতে কত সময় পড়ে থাকে।

চলুন, ছয় মাসের জন্য একটা নতুন পরিকল্পনা করি। এই পরিকল্পনা যদি মেনে চলতে পারেন, ছয় মাস পরে আপনার জীবন একেবারে অন্য রকম হয়ে যাবে।

১. ফালতু আড্ডাকে ‘না’ বলুন।

বন্ধু ফোন দিয়ে বলল, “চল, টো টো করে ঘুরি, আড্ডা দিই।” আপনি জানেন, সেই আড্ডা থেকে কোনো কাজের কথা উঠবে না, শুধু সময় নষ্ট। এখন কী করবেন?

বিনয়ের সঙ্গে বলুন, “না রে ভাই, আজ পারব না।” প্রথমে কঠিন লাগবে, কিন্তু একবার চেষ্টা করে দেখুন। প্রতিবার না বলার পর যখন দেখবেন আপনার সময়টা সৃজনশীল কাজে যাচ্ছে, তখন গর্ব অনুভব করবেন।

২. নিজের স্বপ্নটাকে গুরুত্ব দিন।

আপনার কোনো স্বপ্ন আছে, তাই না? হয়তো একটা বই লেখা, নতুন কোনো স্কিল শেখা, বা একটা ব্যবসা শুরু করা। কিন্তু দিনের শেষে সময় আর এনার্জি না থাকায় সেটাকে দমিয়ে রাখেন। এবার সেই স্বপ্নের দিকে সময় দিন।

ছোট ছোট অংশে ভাগ করে প্রতিদিন কাজ করুন। ছয় মাস পরে যখন দেখবেন, আপনার কাজ এগিয়ে গেছে, তখন নিজেকে ধন্যবাদ দিবেন।

৩. যে পরিবেশ আপনাকে গ্রো করতে দেয় না তা থেকে বের হয়ে আসুন।

আপনার আশেপাশে এমন কিছু মানুষ আছে, যারা সবসময় শুধু নেগেটিভ কথা বলে, আপনাকে হতাশ করে? কিংবা এমন পরিবেশ যেখানে বসে শুধু সময় নষ্ট হয়?

এই ছয় মাসের জন্য তাদের থেকে দূরে থাকুন। নিজেকে এমন মানুষের সঙ্গে যুক্ত করুন, যারা আপনাকে উৎসাহ দেয়, অনুপ্রাণিত করে।

৪. দৈনন্দিন কাজগুলো গুছিয়ে নিন।

দিনের কাজগুলোর একটা তালিকা করুন। সকালে উঠে ভাবুন, “আজ কী কী করব?” আর সেটা সময়মতো শেষ করুন।

রাতের শেষে যখন দেখবেন, আপনার সব কাজ শেষ হয়েছে, তখন একটা আত্মবিশ্বাস জন্মাবে। আর সেই আত্মবিশ্বাস আপনাকে আরও ভালোভাবে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

৫. নিজের শরীরের যত্ন নিন।

এটা খুব জরুরি। আপনার শরীর যদি সুস্থ না থাকে, তাহলে কোনো কাজই এগোবে না। প্রতিদিন অন্তত আধঘণ্টা হাঁটুন বা ব্যায়াম করুন।

আর মনের যত্ন নিতে প্রতিদিন সকালে ১০ মিনিট ধ্যান করুন। দেখবেন, আপনার মন শান্ত থাকবে, আর কাজে মনোযোগ আরও বাড়বে।

৬. সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম থেকে বিরতি নিন।

ফেসবুক, টিকটক, ইনস্টাগ্রাম—এগুলো যতটুকু দরকার ততটুকুই ব্যবহার করুন। এই ছয় মাসে ঠিক করুন, দিনে এক ঘণ্টার বেশি এদের পেছনে সময় দেবেন না।

এই সময়টা বরং কিছু শিখতে ব্যয় করুন। একটা অনলাইন কোর্স করতে পারেন, বা একটা নতুন বই পড়া শুরু করতে পারেন।

৭. প্রতিদিন নতুন কিছু শিখুন।

নতুন কিছু শেখা মানেই নতুন দরজা খোলা। ছয় মাসের জন্য একটা পরিকল্পনা করুন। প্রতিদিন একটা নতুন স্কিল শেখার চেষ্টা করুন। হয়তো এটা কুকিং, হয়তো ডিজিটাল মার্কেটিং, কিংবা কোনো নতুন ভাষা।

ছয় মাস পরে দেখবেন, আপনি নিজেই একটা সম্পদে পরিণত হয়েছেন।

ভাবুন তো, ছয় মাস পরে আপনি কোথায় দাঁড়াবেন?

ছয় মাস খুব বেশি সময় নয়। কিন্তু এই সময়টা যদি ঠিকমতো ব্যবহার করেন, ছয় মাস পরে আপনার জীবন একদম নতুন মোড় নেবে। আপনি হয়তো নিজের স্বপ্নের একদম কাছে পৌঁছে যাবেন।

জীবনটা ছোট।

কিন্তু আমরা এটাকে আরও ছোট করি অপ্রয়োজনীয় কাজে।

ছয় মাসের জন্য নিজের হাতে নিয়ন্ত্রণ নিন।

নিজের স্বপ্ন, নিজের লক্ষ্য, নিজের ভবিষ্যতের জন্য সময় দিন।

ছয় মাস পর যখন আয়নায় নিজেকে দেখবেন, তখন একজন বদলে যাওয়া মানুষকে দেখতে পাবেন—আর সেই মানুষটি হবে আপনারই আপডেটেড ভার্সন।

তো? এই ছয় মাসের যাত্রা শুরু করবেন কবে?

আপনার জীবনের সবচেয়ে বড় সিদ্ধান্ত হয়তো আজ থেকেই শুরু হতে পারে।

জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে সঠিক সিদ্ধান্ত এবং নীতির গুরুত্ব

জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে সঠিক সিদ্ধান্ত এবং নীতির গুরুত্ব



মানুষের জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে সঠিক সিদ্ধান্ত এবং নীতির গুরুত্ব অপরিসীম। সঠিক নীতি অনুসরণ করলে জীবনের মান উন্নত হয়, আর ভুল নীতি আপনাকে বিপদে ফেলতে পারে। নিচে কিছু মূল্যবান নিয়ম এবং জীবনব্যবস্থা উল্লেখ করা হলো যা আপনাকে জীবনে সাফল্যের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাবে:

১. নিজেকে কখনো বড় করে প্রকাশ করবেন না।

নিজেকে বড় করে তুলে ধরা আত্মবিশ্বাস নয়, অহংকার। এটি অন্যের চোখে আপনাকে ছোট করে তোলে। বিনয়ী এবং নম্র আচরণ মানুষের মন জয় করার চাবিকাঠি।

২. ভুল স্বীকার করুন এবং "Thank you", "Please" বলুন।

ভুল স্বীকার করা দুর্বলতা নয় বরং আত্মজ্ঞান এবং সাহসিকতার পরিচয়। ছোট কথাগুলো যেমন "ধন্যবাদ" বা "অনুগ্রহ করে" মানুষকে সম্মানিত করে এবং সম্পর্ক উন্নত করে।

৩. নিজের গোপন কথা কাউকে বলবেন না।

গোপন বিষয় শেয়ার করা ঝুঁকিপূর্ণ। কাউকে অন্ধভাবে বিশ্বাস করলে আপনাকে বিপদে পড়তে হতে পারে। সবসময় সতর্ক থাকুন।


৪. অভিজ্ঞতা ছাড়া ব্যবসায় ঝাঁপ দেবেন না।

অর্থ এবং সময়ের অপচয় এড়াতে যেকোনো ব্যবসায় নামার আগে জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা অর্জন করুন।


৫. পরচর্চা করবেন না।

যে অন্যের নিন্দা করে, সে আপনার পেছনেও নিন্দা করবে। নিজের সময় এবং মানসিক শক্তি নষ্ট না করে ইতিবাচক কাজে মনোযোগ দিন।


. গাধার সঙ্গে তর্ক করবেন না।

তর্কের শুরুতেই সে আপনাকে তার স্তরে নামিয়ে আনবে এবং আপনাকে অপদস্থ করবে। তাই, যুক্তিহীন তর্ক এড়িয়ে চলুন।


৭. কোনো কাজ পরে করার জন্য ফেলে রাখবেন না।

যদি কাজ ফেলে রাখেন, তা আর কখনোই সম্পন্ন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে না। "এখনই" কাজ শেষ করার অভ্যাস তৈরি করুন।


৮. ‘না’ বলতে শিখুন।

সবসময় অন্যকে খুশি করার জন্য নিজেকে বোঝার মধ্যে ফেলবেন না। প্রয়োজনে দৃঢ়ভাবে ‘না’ বলুন। এটি আত্মসম্মান রক্ষার অংশ।


. বাবা-মা এবং জীবনসঙ্গীকে সমান গুরুত্ব দিন।

কোনো সম্পর্কের কারণে অন্য কোনো গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ককে উপেক্ষা করবেন না। পরিবার হলো জীবনের মূল শক্তি।


১০. সবাইকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করবেন না।

আপনি যদি সবসময় অন্যকে সন্তুষ্ট করার জন্য নিজেকে পরিবর্তন করেন, তবে নিজের ব্যক্তিত্ব হারাবেন। নিজের মূল্য বুঝতে শিখুন।


১১. ঝুঁকি ছাড়া সাফল্য আসে না।

সফল হতে হলে জীবনে হিসাব করা ঝুঁকি নিতে হবে। সঠিক পরিকল্পনা এবং সাহসিকতার মাধ্যমে এগিয়ে যান।


১২. স্মার্টফোনে আসক্ত হবেন না।

স্মার্টফোন জীবন সহজ করে, তবে অতিরিক্ত ব্যবহার আপনার সময় এবং মনোযোগ নষ্ট করে। গুগলে সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়া যায় না, তাই বাস্তব জীবনেও অভিজ্ঞতা অর্জন করুন।


১৩. ইচ্ছা প্রকাশ করতে দেরি করবেন না।

নিজের অনুভূতি প্রকাশ করতে ভয় পাবেন না। দেরি করার ফলে হয়তো কখনোই তা আর প্রকাশ করা হবে না, যা সারা জীবনের আফসোস হয়ে থাকতে পারে।


১৪. মানসিক শান্তি নষ্ট করে এমন সম্পর্ক থেকে সরে আসুন।

যে সম্পর্ক আপনাকে কষ্ট দেয়, তা আঁকড়ে ধরা উচিত নয়। মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিন।


১৫. লক্ষ্যের পিছু ধাওয়া করা বন্ধ করবেন না।

আপনি কখনোই জানেন না যে সাফল্য ঠিক কতটা কাছাকাছি। তাই ধৈর্য ধরে চেষ্টা চালিয়ে যান। বেশিরভাগ মানুষ হাল ছেড়ে দেয় সাফল্যের ঠিক আগে।


১৬. অকারণে শত্রু তৈরি করবেন না।

অকারণে কারো সঙ্গে শত্রুতা তৈরি করা নিজের ক্ষতি ডেকে আনে। সম্পর্ক রক্ষা করতে যতটা সম্ভব কৌশলী থাকুন।


১৭. কারো ধর্মবিশ্বাসে আঘাত করবেন না।

ধর্ম এবং বিশ্বাস মানুষের অন্তরের গভীরে থাকে। এটি নিয়ে কটূক্তি করা বা সোশ্যাল মিডিয়ায় আপত্তিকর পোস্ট দেওয়া সমস্যার সৃষ্টি করতে পারে।


১৮. একান্ত মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও করবেন না।

ব্যক্তিগত মুহূর্তের ছবি বা ভিডিও রেকর্ড করা ভবিষ্যতে বিপদের কারণ হতে পারে। এ ধরনের ভুল থেকে দূরে থাকুন।


১৯. সম্মান বিসর্জন দিয়ে সম্পর্ক টিকিয়ে রাখবেন না।

যে জায়গায় আপনার সম্মান নেই, সেখানে থাকা নিজের আত্মসম্মানকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। নিজেকে মূল্য দিন।


২০. টাকার পেছনে দৌড়ে প্রিয়জনদের উপেক্ষা করবেন না।

টাকা গুরুত্বপূর্ণ, তবে তা যেন প্রিয়জনদের সময় এবং ভালোবাসার বিকল্প না হয়। ব্যালান্স বজায় রাখুন।


২১. যা হারিয়েছেন তা নিয়ে আফসোস করবেন না।

হারানো জিনিস বা সময় নিয়ে আফসোস করা কেবল আপনাকে পেছনে টানে। ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যাওয়াই বুদ্ধিমানের কাজ।


এই নিয়মগুলো অনুসরণ করলে জীবন আরও সমৃদ্ধ, শান্তিময় এবং সফল হয়ে উঠবে। জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে সচেতন হয়ে সিদ্ধান্ত নিন।

 

বই পড়ে যেভাবে অর্থ উপার্জন করতে পারেন

বই পড়ে যেভাবে অর্থ উপার্জন করতে পারেন



বই কিনে কেউ দেউলিয়া হয় না। কারণ, বই পড়ে আপনি যে জ্ঞান অর্জন করবেন, তা আপনাকে জীবনের বিভিন্ন পর্যায়ে আরও সমৃদ্ধ করবে। এসব কথা সবারই জানা। তবে আরও খুশির খবর হচ্ছে, বর্তমান ডিজিটাল পৃথিবীতে বই পড়ে শুধু জ্ঞান অর্জনই নয়, অর্থ উপার্জনও সম্ভব। বই পড়া অনেকেরই প্রিয় নেশা। এই নেশাই যদি কারোর পেশা হয়ে যায়, তাহলে কী চমৎকার হবে ব্যাপারটা, তাই না? জেনে নেওয়া যাক বই পড়ে অর্থ উপার্জনের কয়েকটি উপায়।

১. বই-বিষয়ক ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি:

ইউটিউব, ইনস্টাগ্রাম কিংবা টিকটক— যে মাধ্যমেই আপনি ভিডিও কন্টেন্ট তৈরি করতে চান না কেন, আপনাকে এক বা একাধিক ‘নিশ’, অর্থাৎ বিষয়বস্তু নির্বাচন করতে হবে। কন্টেন্ট নির্মাতা হিসেবে কাজ করতে গিয়ে শুরুতে অনেকে ভেবেই পান না, কী নিশ নির্বাচন করা যায়। আপনি বই পড়তে ভালোবাসেন? তাহলে আপনার ঝামেলা এখানে অর্ধেকই কমে গেল। নিশ হিসেবে আপনি বইপত্রকেই বেছে নিতে পারেন অনায়াসে। নিজের সংগ্রহে থাকা প্রিয় বইগুলো নিয়েই শুরু করুন ভিডিও তৈরি। নির্দিষ্ট কোনো একটি বই সম্পর্কে তথ্য দিন। যেমন বইটি কার লেখা, কবে, কোন প্রকাশনী থেকে বেরিয়েছে, দাম কত ইত্যাদি। এরপর বইটির বিষয়বস্তু সম্পর্কে আলোচনা করুন, বইটি সম্পর্কে আপনার ভালো লাগা, মন্দ লাগা নিয়ে কথা বলুন। এভাবেই বিভিন্ন বই নিয়ে আপনি বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মের উপযোগী ছোট-বড় কন্টেন্ট তৈরি করতে পারেন। শুধু যে ভিডিও মনিটাইজ করার মাধ্যমেই ভিডিও থেকে অর্থ উপার্জন করা যায়, তা নয়। পেইড প্রোমোশন, অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের মাধ্যমেও ভিডিও থেকে অর্থ উপার্জন সম্ভব।

২. অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করা:

অ্যাফিলিয়েট মার্কেটিংয়ের প্রচলিত পদ্ধতিগুলোর মধ্যে একটি হচ্ছে অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করা। অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করে আয় করার পদ্ধতিটি এ রকম—ধরুন, অনলাইনে কোনো একটি ওয়েবসাইটে একটি পণ্য বিক্রি হচ্ছে। আপনি সেই পণ্য নিয়ে ফেসবুকে কিছু লিখলেন এবং সেই পণ্যের একটি অ্যাফিলিয়েট লিংক জেনারেট করে আপনার লেখাটির নিচেই পেস্ট করে লেখাটি পোস্ট করলেন। আপনার পোস্ট করা লিংকে ক্লিক করে যতবার কেউ পণ্যটি কিনবে, ততবার আপনি কমিশন পাবেন। বর্তমানে দেশে-বিদেশে বই বিক্রির বিভিন্ন ওয়েবসাইটের অ্যাফিলিয়েট প্রোগ্রাম আছে। এসব ওয়েবসাইটে অ্যাফিলিয়েট অ্যাকাউন্ট খুলে আপনিও লিংক জেনারেট করা শুরু করতে পারেন। ফেসবুক তো ব্যবহার করা হয়ই। অ্যাফিলিয়েট লিংকগুলো আপনার ফেসবুকে পোস্ট করুন। বইগুলো সম্পর্কে গুছিয়ে লিখুন, যাতে বইটি কিনতে আপনার ফেসবুক ফ্রেন্ড-ফলোয়াররা আগ্রহী হন। শুধু ফেসবুক নয়, এক্স, ইনস্টাগ্রাম, টিকটক, ইউটিউব—সব প্ল্যাটফর্মের কন্টেন্টের সঙ্গেই অ্যাফিলিয়েট লিংক পোস্ট করা সম্ভব।

৩. ব্লগ লেখা:

ওয়ার্ডপ্রেস বা উইবলি ব্যবহার করে আপনি বিনা মূল্যেই আপনার ব্লগ সাইট তৈরি করতে পারেন এবং বই–বিষয়ক ব্লগ প্রকাশ করতে পারেন। বইয়ের অ্যাফিলিয়েট লিংক শেয়ার করে অর্থ আয়ের একটি ভালো মাধ্যম ব্লগ সাইটগুলো। যেসব বই সম্পর্কে লিখবেন, সেসবের অ্যাফিলিয়েট লিংকগুলোও ব্লগের নিচে পেস্ট করে দেবেন। এ ছাড়া ব্লগের পাঠকসংখ্যা বাড়লে সাইটে বিজ্ঞাপন প্রচারের মাধ্যমেও আয় করা সম্ভব। তবে সেটি ফ্রি ওয়েবসাইটের মাধ্যমে সম্ভব হবে না।

৪. পেইড রিভিউ লেখা:

আজকাল দেশ-বিদেশের লেখকেরা রিভিউ লেখার জন্য লেখক খোঁজেন। লেখকেরা ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে অহরহ বুক রিভিউয়ার চেয়ে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেন। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থাও তাদের প্রকাশিত বইয়ের রিভিউ লেখানোর জন্য রিভিউয়ার নিয়োগ দেয়। কাজেই আপনার যদি পড়ার অভ্যাস থাকে এবং লেখার হাতও ভালো হয়, তাহলে বুক রিভিউয়ার হিসেবে আপনি কাজ করে অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

৫. প্রচ্ছদ ও অলংকরণ:

এ কাজ করতে হলে শুধু পড়ার অভ্যাস থাকলেই চলবে না, আপনার বই নকশার দক্ষতাও থাকতে হবে। বইয়ের প্রচ্ছদ আঁকতে বা ডিজাইন করতে হলে বইটি অবশ্যই ভালোভাবে আগে পড়া প্রয়োজন। আর অলংকরণের কাজ করতে হলে তো বইয়ের বিষয়বস্তুর সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রতিটি পাতার জন্যই আলাদাভাবে ছবি আঁকতে হয়, অর্থাৎ এই পেশায় আসতে হলে ভালো আঁকতেও হবে, পড়তেও ভালোবাসতে হবে। তাই আপনার আঁকাআঁকিতে দক্ষতা থাকলে এবং বই পড়ার অভ্যাস থাকলে প্রচ্ছদ ও অলংকরণ শিল্পী হিসেবে কাজ করতে পারেন।

৬. পডকাস্ট:

শুধু ভিডিও নয়, পডকাস্টে বিভিন্ন বই সম্পর্কে আলোচনা করে আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারেন।

৭. অডিও বুক তৈরি:

আজকাল অডিও বুকেরও বেশ চাহিদা আছে। লেখকেরা অডিও বুক বিক্রি করেও অর্থ উপার্জন করেন। লেখকদের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়ে অডিও বুক তৈরি করে আপনি অর্থ উপার্জন করতে পারেন। এ কাজের জন্য অবশ্যই আপনার একটি ভালো মানের সাউন্ড সিস্টেম প্রয়োজন হবে। আপনাকে মাইক্রোফোনের সামনে সুন্দরভাবে বইগুলো পাঠ করতে করতে রেকর্ড করতে হবে। পড়তে গেলে ভুলভাল হতেই পারে। তাই অডিও বুক তৈরি করতে হলে অডিও এডিটিংয়েও আপনার দক্ষতা থাকা প্রয়োজন।

৮. বই অনুবাদ করা

আপনি যদি একাধিক ভাষায় পারদর্শী হন, তাহলে বই অনুবাদ করে বিক্রি করেও আয় করতে পারেন। আপনাকে যে শুধু কোনো প্রকাশনী থেকেই বই বের করতে হবে, তা নয়। আজকাল অ্যামাজন কেডিপির মতো প্ল্যাটফর্মে লেখকেরা স্বাধীনভাবে, নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় ই–বুক প্রকাশ করেন এবং বই বিক্রি বাবদ অর্থ আয় করেন।

৯. প্রুফ রিডিং:

পড়ার অভ্যাস ও ভাষাগত দক্ষতা—দুটিই যদি আপনার থাকে, তাহলে প্রুফ রিডার হিসেবে কাজ করতে পারেন। প্রুফ রিডিং, অর্থাৎ পাণ্ডুলিপির ভুলত্রুটি সংশোধন করা হতে পারে আপনার ফুলটাইম পেশা কিংবা বাড়তি আয়ের একটি মাধ্যম। প্রুফ রিডার হিসেবে আপনি বিভিন্ন প্রকাশনা সংস্থায় চাকরি পেতে পারেন, ফ্রিল্যান্সার হিসেবেও কাজ করতে পারেন। আপওয়ার্ক, ফাইভারের মতো ফ্রিল্যান্সিং প্ল্যাটফর্মগুলোতে প্রুফ রিডারদের চাহিদা আছে। প্রুফ রিডিং শেখা খুব একটা কঠিন নয়, তবে এ ক্ষেত্রে আপনার ভাষাগত দক্ষতা খুবই জরুরি। শুদ্ধ বানান, বিরাম চিহ্নসহ ব্যাকরণগত দিকগুলো সম্পর্কে ভালো জ্ঞান থাকা প্রয়োজন।

____________

সূত্র: মিডিয়াম ডটকম