১২০৪ খ্রিঃ ইখতিয়ার উদ্দিন মুহাম্মদ বখতিয়ার খিলজি বাংলা বিজয় করেন এবং তিনি
স্বর্ণমুদ্রার প্রচলন করেন । তাঁর মুদ্রায় তিনি ভারতের প্রথম মুসলিম রাজবংশ
প্রতিষ্ঠাকারী মুহাম্মদ ঘোরি বা মুহাম্মদ বিন সাম এর নাম ব্যবহার করেন ।
বখতিয়ার
খিলজির স্বর্ণমুদ্রা :
আসলে
বঙ্গ বিজয়কে স্মরণীয় করে রাখতেই স্মারক মুদ্রা হিসেবে এই মুদ্রা চালু হয়েছিল ।
মুদ্রাটির বিবরণ নিচে দেওয়া হলো ।
ধাতুঃ
সোনা
সামনের
পিঠঃ বৃত্তের মধ্যে গদা হাতে অগ্রসরমান অশ্বারোহী ।
উৎকীর্ণ লিপিঃ আরবী- ফি মুন্তাসফ রমাজান সানহ আহদি ওয়া সাতমায়াহ ।
নাগরী-
গৌড় বিজয় ।
পেছনের
পিঠঃ আরবি লিপি- আল সুলতান আল মুয়াজ্জাম মুইজুদ্দুনিয়া ওয়াদ্দিন আল মুজাফফর
মুহাম্মদ বিন সাম ।
বর্তমানে
দুষ্প্রাপ্য এই মুদ্রার একটি আছে লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়ামে এবং অন্যটি আছে
ওয়াশিংটেনের মিথসোনিয়ান ইন্সটিটিউটে ।
পরবর্তীতে
বখতিয়ার খিলজির শাহাদাতের পর ১৩৩৮ খ্রিঃ পর্যন্ত ২২ জন মুসলিম শাসক দিল্লির সাথে
সুসম্পর্ক বজায় রেখেছিলেন । তাদের মধ্যে ৬ জন শাসক মুদ্রার প্রচলন করেছিলেন ।
তাঁদের নাম নিচে দেওয়া হলো । উল্লেখ্য যে, এদের মুদ্রাগুলো প্রধানত
রূপার তৈরী ।
নাম ও রাজত্বকাল:
১.
গিয়াস উদ্দিন ইওয়াজ খিলজি (১২১১ খ্রিঃ – ১২২৭ খ্রিঃ)
২.
মুঘিস উদ্দিন ইউজবক (১২৪৬ খ্রিঃ – আনুমানিক ১২৫১ খ্রিঃ)
তাঁদের
মুদ্রার বৈশিষ্ট্যঃ
সামনের
পিঠে কলেমা উৎকীর্ণ ছিল । তারিখও উল্লেখ করা ছিল । পিছনের পিঠে শাসকের নাম ও পদবী উল্লেখ করা ছিল । মুদ্রাগুলো
ছিল রূপার তৈরি ।
৩.
রুকনুদ্দিন কায়কাউস ( ১২৯১ খ্রিঃ- ১৩০২খ্রিঃ)
৪.
সামসুদ্দিন ফিরোজ শাহ ( ১৩০২ খ্রিঃ- ১৩১৮খ্রিঃ)
৫.
শিহাব উদ্দিন বুঘরা শাহ (১৩১৮ খ্রিঃ)
৬.
গিয়াস উদ্দিন বাহাদুর শাহ ( আনুমানিক ১৩১০ খ্রিঃ – আনুমানিক ১৩২২ খ্রিঃ)
তাঁদের
মুদ্রার বৈশিষ্ট্যঃ
কলেমার
স্হানে বাগদাদের শেষ আব্বাসিয় খলিফা আল মুস্তাসিম এর নাম উৎকীর্ণ থাকতো । মুদ্রাগুলো ছিল রূপার তৈরী । তবে সামসুদ্দিন ফিরোজ শাহের কিছু সোনার মুদ্রা ছিল ।
তথ্যের
সূত্রঃ মুদ্রা ইতিহাস ও সংগ্রহ – মাহমুদুল হাসান, জাগৃতি প্রকাশনী ঢাকা,প্রথম প্রকাশ ২০০২,পৃষ্ঠা
১৩৯ ।
0 comments: